আইএস ও পিকেকে নির্মূলে তুরস্কের তৎপরতা
- By Jamini Roy --
- 22 December, 2024
সিরিয়ায় রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদলের এ সময়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কুর্দি গোষ্ঠী পিকেকেকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার উপযুক্ত সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। সিরিয়ার নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডি-৮ সম্মেলনে যোগদান শেষে কায়রো থেকে আঙ্কারায় ফেরার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, "দায়েশ (আইএস), পিকেকে এবং তাদের সহযোগীরা, যারা সিরিয়ার অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছিল, তাদেরকে অবশ্যই নির্মূল করা উচিত। এখনই এ কাজ শুরু করার আদর্শ সময়।"
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস ২০১১ সালে সিরিয়ায় আত্মপ্রকাশ করে। নির্মম ও সহিংস কার্যক্রমের জন্য পরিচিত এই গোষ্ঠী খুব দ্রুতই সিরিয়া ও ইরাকের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। সিরিয়ার রাক্কা শহরকে তারা নিজেদের কথিত রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে।
আইএসের উত্থান তুরস্কের জন্যও মারাত্মক চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। কারণ তুরস্কের সীমান্তের কাছেই গোষ্ঠীটির অবস্থান ছিল। নিজ দেশে আইএসের বিস্তার ঠেকাতে তুরস্কের সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।
পিকেকে তুরস্কের জন্য দীর্ঘদিনের একটি নিরাপত্তা সমস্যা। ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই গোষ্ঠী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং ইরাকের উত্তরাঞ্চল নিয়ে একটি স্বাধীন কুর্দিস্তান প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছে। গত কয়েক দশকে পিকেকে তুরস্কে একাধিক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
পিকেকের পাশাপাশি এর সহযোগী দুটি গোষ্ঠী—সিরিয়ান ডিফেন্স ফোর্স (এসডিএফ) এবং ওয়াইজিপি—তুরস্কের নিরাপত্তার জন্য আরও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এরদোয়ান বলেন, "আমরা আমাদের সাধ্যমতো সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসীদের ঠেকিয়ে রাখছি। তবে এটি একার পক্ষে সম্ভব নয়। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করি, তাহলে এই সংকট থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব।"
তিনি আরও জানান, সিরিয়ার নতুন সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে প্রাথমিক বৈঠক হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় তুরস্কের শীর্ষ কূটনীতিবিদ হাকান ফিদানকে দামেস্কে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে আইএস, পিকেকে, এসডিএফ, এবং ওয়াইজিপিকে কীভাবে দ্রুত নির্মূল করা যায়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।